করোনাকে ভয় না পাওয়ার ১০ টি কারণ
ফটোনিউজবিডি ডেস্ক: | PhotoNewsBD
১৪ মার্চ, ২০২০, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ

কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর মিছিল শুরু চীনের উহান থেকে। শেষটা কোথায় তা হলফ করে কেউই বলতে পারছে না। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৩৬টি দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। বেড়েই চলছে আক্রান্তের সংখ্যা। সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে বহু দেশে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও গণপরিবহন ব্যবস্থা। করোনাভাইরাসকে মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এতকিছুর পরেও করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকের সুস্থ হওয়া খবর পাওয়া গেছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রায় সোয়া লাখ মানুষ। তারাও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবেন বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।
করোনা নিয়ে উদ্বেগ থাকতেই পারে, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছে নাভারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইগ্নাসিও লোপেজ গনি। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটি করোনাকে ভয় না পাওয়ার ১০ টি কারণ বর্ণনা করেছে।
কারণগুলো হলো—
প্রথম অ্যাইডস রোগী ধরা পড়েছিল ১৯৮১ সালের জুন মাসে৷ তবে সেই রোগের কারণ যে এইচআইভিভাইরাস সেটা বুঝতে দু’বছরের বেশি সময় লেগেছিল৷ আর মানবদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর (বুধবার) চীনে৷ সেই ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যে ভাইরাসটি শনাক্ত সম্ভব হয়৷ শুধু তাই নয়, প্রথম সংক্রমণের ১০ দিনের মাথায় ভাইরাসটির ধরন, উৎপত্তিসহ প্রায় সব তথ্য জানা সম্ভব হয়৷
১৩ জানুয়ারি (সোমবার) থেকে ভাইরাসটি শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় টেস্ট সহজলভ্য হয়৷
চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কড়াকড়ি এবং বিচ্ছিন্ন রাখার নীতি কাজ করেছে৷ দেশটিতে প্রতিদিনই নতুন সংক্রমণের হার কমছে৷ বিশ্বের অন্যান্য দেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে যেটা পরিষ্কার তা হচ্ছে ভাইরাসটি ছড়ালে তা নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকছে। ফলে সেটির সংক্রমণের পরিধি সীমিত রাখা সহজ৷
৮১ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ টের পাওয়া যায়না বা খুব হালকা কিছু লক্ষণ টের পাওয়া যায়৷ তবে ১৪ শতাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমণের লক্ষণগুলো প্রবলভাবে ফুটে ওঠে এবং পাঁচ শতাংশক্ষেত্রে সেটি খুবই জটিল আকার বা প্রাণঘাতি হতে পারে৷ তবে ভাইরাসটিতে মৃত্যুর সঠিক হার এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ এখন পর্যন্ত মৃত্যুর যে হারের কথা শোনা যাচ্ছে, প্রকৃত হার তার চেয়ে কম হতে পারে৷
এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে মূলত শনাক্তকৃত করোনাভাইরাস রোগী এবং করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা থাকে৷ এসব সংখ্যা পর্যালোচনা করলে দেয়া যাচ্ছে আক্রান্ত যত মানুষ মারা যাচ্ছেন তারচেয়ে ১৩ গুণ বেশি মানুষ সুস্থ হচ্ছেন৷ আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যার মধ্যকার আনুপাতিক হার ক্রমশ বাড়ছে৷
এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র তিন শতাংশের বয়স ২০ বছরের নিচে। আর ৪০ বছরের নিচে বয়সিদের মধ্যে মৃত্যুর হার মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ৷ শিশুদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণের লক্ষণগুলো এতই হালকা হতে পারে যে তা হয়তো অনেকের নজরেই পড়বে না৷
অ্যালকোহলযুক্ত জীবাণুনাশক ব্যবহার করে মাত্র একমিনিটেই সার্ফেসে থাকা করোনাভাইরাস নিষ্ক্রিয় করা যায়৷ পাশাপাশি সাবান এবং পানি ব্যবহার করে কিছুক্ষণ পরপর হাত ধুয়ে করোনা ভাইরাস থেকে অনেকটাই নিরাপদে থাকা যায়৷
করোনাভাইরাস ছড়ানোর একমাসের মধ্যেই বিশ্বের নানা দেশে অবস্থানরত বিজ্ঞানী, গবেষকরা এই বিষয়ে শতাধিক নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন৷ আরও অনেক নিবন্ধ রিভিউয়ের অপেক্ষায় রয়েছে৷ অতীতে এ ধরনের মহামারি ছড়ানোর পর সাধারণত সেটা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পেতে আরও অনেক বেশি সময় লাগতো৷
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য অন্তত আটটি প্রকল্প কাজ করছে৷ অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম ভ্যাকসিনের একটি প্রোটোটাইপও তৈরি করে ফেলেছে৷ এ ধরনের প্রোটোটাইপ শিগগিরই মানবদেহে পরীক্ষা করা হবে৷
ভ্যাকসিন দীর্ঘমেয়াদে ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে৷ কিন্তু এই মুহূর্তে যারা আক্রান্ত তাদের চিকিৎসা প্রদান জরুরি৷ করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় ব্যবহারের উপযোগী হতে পারে এমন ৮০টির বেশি অ্যান্টিভাইরালের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে৷